১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে মুষ্টিমেয় কিছু বেঈমানের জন্যে বাংলা তার স্বাধীনতা হারালে বাংলার জনগন সে সময় থেকেই স্বাধীনতা ফিরে পাবার কিংবা আত্ম-মর্যদাশীল জাতি হিসাবে বিশ্ববুকে বেচে থাকার প্রয়াসে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক সংগ্রাম গড়ে তুলেছে। কিন্তু স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে আত্ম-মর্যাদাশীল জাতি হিসাবে বেচে থাকার রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনা দিয়ে গেছেন বহু-দলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট বীর উত্তম জিয়াউর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে কিছু বেঈমান এবং কুচক্রীদের সুক্ষ্ম পরিকল্পনায় মুক্তিযুদ্ধের পরে স্বাধীন-বাংলাদেশের সংবিধানে পার্শ্ববর্তী দেশের রাজনৈতিক আদর্শ তথা সেক্যুলারিজ জোরপূর্বক চাপিয়ে দেওয়া হয়। এক দলীয় আওয়ামী বাকশালী অপশাসনে বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিনিত হয়, জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠে -এমনই এক চরম রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে ৭ই নভেম্বরে সিপাহী-জনতা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগন আবারো মেজর জিয়ার কন্ঠস্বর শুনতে পান। বাংলাদেশের জনগন এই একই কন্ঠস্বর শুনেছিলো সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষনার ডাকে- মেজর জিয়া স্বাধীনতার ঘোষনা দেবার পাশাপাশি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধেরও ডাক দেন। ঠিক সেই সময়ে আওয়ামী সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ক্ষমতা হস্তান্তরের বিভিন্ন পন্থা নিয়ে পাকিস্তানের সেনা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাতে ব্যস্ত ছিলেন- এমনই এক পর্যায়ে ২৫শে মার্চ রাতে অপরাশেন সার্চ লাইটের নামে পাকিস্তানের বর্বর শাসকগোষ্ঠি নিরস্ত্র জনগনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে, বাংলার মাটি যখন রক্তে রঞ্জিত হয়ে উঠে তখন আজকের তথাকথিত চেতনাধারী আওয়ামী নেতারা পরিবার নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে চলে যান (পড়ুন পালিয়ে যান)। কোন দিক-নির্দেশনা না দিয়েই স্বেচ্ছায় গ্রেফতার হোন আওয়ামী প্রধান নেতা। এমন এক চরম রাজনৈতিক সংকটে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষনা এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ডাকে সারা বাংলাদেশে এক উদ্দীপনার তরংগ ছড়িয়ে পড়ে (এইদিনেই আওয়ামী লীগের অপমৃত্যু ঘটে) - গ্রাম-বাংলার খেটে খাওয়া কৃষক, তরুন, ছাত্র-ছাত্রীরা সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে।
সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনকারী একজন মেজর বাংলাদেশের প্রধান হিসাবে কিংবা রাষ্ট্রপতি হিসাবে ১৯ দফার রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু করলে বেঈমান শ্রেণীটি সজাগ হয়ে উঠে, অপপ্রচার আর মিথ্যাচার শুরু করে দেয় মেজর জিয়ার নামে। সেই মিথ্যাচারের ডামাডোল বাজাইতে টিপাইমুখপন্থীরা এখনও সোচ্চার।
টিপাইমুখে ভারতীয় বাধ নির্মাণের পক্ষে সাফাই গাইতে দেখা যায় আজকের আওয়ামী মন্ত্রীদের মুখে, ভারতকে বিনা ফিতে ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট দিয়ে দেশদ্রোহী সরকারের উপদেষ্টাদের নানা অসংলগ্ন কথাবার্তা শুনা যায়, পিলখানায় সরকারের পরোক্ষ সমর্থনে সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে এখন বিডিআর-এর নাম পরিবর্তন করে ভারতের অনুকরনে বাংলাদেশ বর্ডার বাহিনী রেখে সেনাবাহিনীকে ধর্মনিরপেক্ষতার নামতা পড়ানো শুরু করেছে আওয়ামী সরকার। এছাড়াও বিএসএফ সীমান্তে পাখির মত বাংলাদেশীদের হত্যা করে কাটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখলেও দাসত্বের পুরুষ্কার সজোরে ঝাপটে ধরে রাখেন সরকার প্রধান। বিদ্যুতখাতের নিয়ন্ত্রন ভারতকে দেবার নীলনকশা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে সরকার, টেলিখাত ভারতীয় কোম্পানী এয়ারটেলকে দেওয়া হয়েছে, সরকারের কূটনৈতিক ব্যর্থতার জন্যে ইতিমধ্যেই মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমবাজার সংকুচিত হতে শুরু করেছে - এহেন প্রেক্ষাপটে দেশকে বাচাইতে,দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে শহীদ জিয়ার ১৯ দফা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। কি আছে এই ১৯ দফাতে?
প্রথম তিনটি দফাতে উল্লেখ আছেঃ
১। সর্বোতভাবে দেশের স্বাধীনতা, অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা।
২। শাসনতন্ত্রের চারটি মূলনীতি অর্থাৎ সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা, গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের সমাজতন্ত্র জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে প্রতিফলন করা।
৩। সর্ব উপায়ে নিজেদেরকে একটি আত্বনির্ভরশীল জাতি হিসেবে গড়ে তোলা।
শহীদ জিয়া ৮০ দশকের প্রথমদিকে এই দফাগুলোর কার্যক্রম শুরু করলেও দেখা যাবে এর ভিতরেই সেই সময়ের রাজনৈতিক বাস্তবতার সাথে বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক সংকটগুলোর মিল আছে। বর্তমান সরকার সংবিধান পরিবর্তন করে একতরফাভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা কিংবা ভারতীয় রাজনৈতিক আদর্শ বাস্তবায়নের কূটকৌশলে লিপ্ত,এই কূটকৌশল বাস্তবায়নে ইসলামকে জংগীবাদ বা সাম্প্রদায়িকের সমার্থক বানিয়ে জনগণকে ধোকা দেবার অপচেষ্টাতে ব্যস্ত রয়েছে বিভিন্ন হলুদ মিডিয়া। এই কুটকৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্য নয়, এমন অনেক অপসংস্কৃতি আমদানী করা হচ্ছে। দেশের তরুন বা ছাত্র সমাজ যেন এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় না হতে পারে তার যথাযথ ঔষধ এখন তৈরীঃ ড্রাগ, অপসংস্কৃতির গান-বাজনা, আকাশ সংস্কৃতি ইত্যাদি আধুনিকতার নামে দেশীয় সংস্কৃতির কাঠামো ভেংগে দেওয়ার নীলনকশায় শশব্যস্ত বেঈমান গ্রুপ।
বিগত দিনে লগি-বৈঠার আন্দোলনের নামে দলীয় দ্বন্দ্বের আড়ালে দেশে এক সিভিল ওয়ার লাগানোর যড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো এই বেঈমানগ্রুপ,এদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা দেশের অখন্ডতার জন্যে বিপদজনক। শহীদ জিয়ার ১৯ দফাতেও এই সকল বেঈমানের সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ থাকার উল্লেখ আছে।
ফারাক্কা বাধের পরিবেশগত কুফলের কথা বিবেচনা করে শহীদ জিয়া ভারতের সাথে আলোচনার ব্যাপারে ছিলেন অনঢ়। অথচ আজকে একের পর এক বাংলাদেশের স্বার্থ উপেক্ষা করে বর্তমান সরকার ভারতের সাথে বিভিন্ন চুক্তি করছে, জনগনকে অন্ধকারে রেখেই। বিদ্যুত, টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার পরে গার্মেন্টস শিল্পের নিয়ন্ত্রন অন্যের হাতে তুলে দেবার লক্ষ্যে নানামুখী স্বার্থবিরোধী পদক্ষেপে সরকার অগ্রসর হচ্ছে।
রাজনীতির আদর্শগত ভিত্তির কাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি জনপ্রশাসনের রুপরেখার কথাও আছে তার প্রবর্তিত ১৯ দফাতেঃ
৪। প্রশাসনের সর্বস্তরে, উন্নয়ন কার্যক্রম এবং আইন-শৃংখলা রক্ষার ব্যাপারে জনসাধারনের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা।
অথচ আজ সর্বস্তরে দলীয়করন, উন্নয়ন কার্যক্রমের নামে দুর্নীতি আর পুলিশ প্রশাসনের অযোগ্যতা জনজীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছে।
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গ্রামীন সমাজ ব্যবস্থার উপর জোর দেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে যুগোপযোগী ব্যবস্থাগ্রহনেরও কথা বলা হয়েছেঃ
৫। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীন তথা জাতীয় অর্থনীতিকে জোরদার করা।
৬। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্ণ করা এবং কেউ যেন ভুখা না থাকে তার ব্যাবস্থা করা।
৭। দেশে কাপড়ের উৎপাদন বাড়িয়ে সকলের জন্য অন্তত মোটা কাপড় সরবরাহ নিশ্চিত করা।
৮। কোন নাগরিক গৃহহীন না থাকে তার যথাসম্ভব ব্যাবস্থা করা।
৯। দেশকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করা ।
১০। সকল দেশবাসীর জন্য নূন্যতম চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা।
নারী এবং যুব সমাজকে কিভাবে দেশের মূল-উন্নয়নের অংশীদার করা যায় তারও রুপরেখার স্বপ্ন শহীদ জিয়ার ১৯ দফাতে আছেঃ
১১। সমাজে নারীর যথাযোগ্য মর্যাদা প্রতষ্ঠা করা এবং যুব সমাজকে সুসঙ্গহত করে জাতি গঠনে উদ্বুদ্ধ করা।
দেশের বেসরকারী খাতকে উন্নয়ন এবং শ্রমিক-মালিকদের অধিকার নিয়ে শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়িত হলে আজকে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো শক্তিশালী হতো। এখানে উল্লেখ্য, ৮০ দশকের প্রথম দিকে আজকের গার্মেন্টসের যাত্রা শুরু হয়েছিলোঃ
১২। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারী খাতে প্রয়োজনীয় উৎসাহ দান।
১৩। শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি সাধন এবং উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে সুস্থ শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।
যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরীতে নিয়োগ এবং তাদের কাজে আগ্রহ তৈরিরও পরিকল্পনার কথা পাওয়া যায়ঃ
১৪। সরকারি চাকুরীজীবিদের মধ্যে জনসেবা ও দেশ গঠনের মনোবৃত্তিতে উৎসাহিত করা এবং তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন করা।
একই সাথে শহীদ জিয়ার সূদুর প্রসারী চিন্তাভাবনার দর্শনও পরিলক্ষিত হয় তার বিভিন্ন কার্যক্রমে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে তার বিভিন্ন পদক্ষেপ সেই ৮০এর দশকেই নেওয়া হয়েছিলো তা না হলে এখন জনসংখ্যার পরিমান কত হতো তা অচিন্ত্যনীয়। একই সাথে মুসলিম দেশসমূহের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শ্রম বাজার স্ফীত হচ্ছিলো সেটাকে সংকুচিত করার নানা কূটকৌশল এখন দৃশ্যমান। একই সাথে আঞ্চলিক উন্নয়নের কাঠামো বির্নিমাণের শহীদ জিয়ার স্বপ্ন সার্ক এখন প্রতিষ্ঠিত হলেও নানা বিপরীমুখী স্রোতের কারনে সার্ক তার অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌছুতে পারছে না।
১৫। জনসংখ্যা বিস্ফোরন রোধ করা।
১৬। সকল বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে সমতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা এবং মুসলিম দেশগুলির সাথে সম্পর্ক জোরদার করা।
এছাড়াও প্রশাসনিক ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় এবং জাতিগত সহনশীলতার বিষয়টিও এসেছে শহীদ জিয়ার ১৯ দফাতেঃ
১৭। প্রশাসন এবং উন্নয়ন ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণ এবং স্থানীয় সরকাররে শক্তিশালী করা।
১৮। দুর্নীতিমুক্ত ন্যায়নীতিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা।
১৯। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল নাগরিকের অধিকার পূর্ন সংরক্ষণ করা এবং জাতীয় ঐক্য এবং সংহতি সুদৃঢ় করা।
নিসন্দেহে বলা যায়, একটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, সামাজিক স্থিতিশীলতা, সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ রক্ষা এবং সর্ব প্রকার উন্নয়নের পূর্ব শর্ত হলো সাম্রাজ্যবাদ শক্তিগুলোর প্রভাবমুক্ত নিজস্ব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একই সাথে স্থানীয় সমস্যাগুলোর নানাবিধ কারণসমুহ চিহ্নিত করে একে জাতীয় কাঠামোতে কিভাবে সমাধান করা যায় তারও পূর্বশর্ত হলো রাজনীতি। একই সাথে আমাদের মনে রাখতে হবে, রাজনীতি ধর্ম নয়, রাজনীতিকে ধর্ম বিশ্বাসের মত আবেগ দিয়ে বিবেচনা করলে নির্বাচন দিনের প্রথম প্রহরেই মাঝিরা নিজ নিজ নৌকা নিয়েই ভোট কেন্দ্রে যাবে। রাজনীতি নদীর স্রোতের মত সময়ের বিবর্তনে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বার্থে, গণ মানুষের মৌলিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজনীতির দিক-প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়, তৈরি হয় নতুন রাজনৈতিক ইস্যু। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে দেশ-বিদেশের রাজনীতির বিভিন্ন ইস্যুর নানাদিকগুলোর উপর আমাদের নিজস্ব যুক্তিসংগত মতামত থাকা উচিত, শুধু ক্রিকেট নিয়ে না থেকে এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা করা উচিত- এতে আমাদের যুব সমাজের রাজনৈতিক চেতনার স্তর আরো উন্নত হবে। তবে এখানে একটি কথা বলা উচিত, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে এক শ্রেণীর সুবিধাপ্রাপ্ত এনজিও টাইপের নীতিবান শ্রেণীর সুশীল তত্ত্বে আমাদের সমাজের নতুন প্রজন্ম ধোঁকা খেয়ে রাজনীতি বিমুখ হয়ে পড়ছে এবং একই সাথে রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদদেরকে নেতিবাচক সমালোচনা করা এদের একটি ফ্যাশনে রূপ নিয়েছে। এই ফ্যাশনে শোতে অংশ গ্রহণ না করে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে রাজনীতিতে আরও সক্রিয়ভাবে প্রবেশ করে ধৈর্য সহকারে এর ভিতরে গণতন্ত্রের চর্চা বা অনুশীলনের চেষ্টা করতে হবে।
এই গণতন্ত্রের বা বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চার বাস্তবায়নের পুর্বশর্ত হলো বাক-স্বাধীনতা। এই বাক-স্বাধীনতা হরন করে একদা যে বাকশাল গঠিত হয়েছিলো, তাদেরই সর্বশেষ প্রেতাত্মার আছড়ে বাংলাদেশ আবারো আছন্ন। দেশকে এই প্রেতাত্মা থেকে মুক্ত করতে হলে,দেশের জনগনকে রক্ষা করতে হলে,গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হলে যে দেশপ্রেম প্রয়োজন তার শেকড় প্রোথিত আছে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ রাজনীতির মূল দর্শনে। আর তাই, স্বাধীনতার ঘোষক, বীর উত্তম, সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতীক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নতুন আংগিকে মূল্যায়নের দিন এসেছে এবং সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ শহীদ জিয়ার ১৯ দফা বাস্তবায়নের রাজনৈতিক আন্দোলনেও অংশগ্রহনের জন্যে দেশপ্রেমিক জনগণ এখন প্রস্তুত।
কাওসার মাহমুদ
ফ্রাংকফুর্ট, জার্মানী
২১ মে ২০১১ইং
কাওসার মাহমুদ
ফ্রাংকফুর্ট, জার্মানী
২১ মে ২০১১ইং
আপনি কেন মনে করেন শহীদ জিয়া দিবসের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে?
Why do you think to introduce a day named shaheed Zia in recent political climate?
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অংগনে শহীদ জিয়ার বিভিন্ন উদ্যোগ যেমন সার্ক গঠনের চিন্তা-ভাবনা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশেসমুহের সাথে বিশেষ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন, ইরাক-ইরান যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ইসলামী সম্মেলনের উদ্যোগে গঠিত আল-কুদস কমিটির সদস্য হওয়া, জাপানের সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী আসন লাভ (১৯৭৮), বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গঙ্গার পানি-বণ্টনের সাত বছর মেয়াদি প্রথম চুক্তি ইত্যাদি কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান প্রশংসনীয়।
এছাড়াও রাষ্ট্রপরিচালনায় ও দেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের জন্য তাঁর গৃহীত নানা পদক্ষেপ যেমন, স্বেচ্ছাশ্রমে খাল কাটা কর্মসূচী, প্রতি থানায় খাদ্যগুদাম নির্মান, জন্ম-নিয়ন্ত্রণে সচেতনা সৃস্টি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। পল্লী বিদ্যুতায়ন, পোশাকশিল্পের যাত্রা, বেসরকারী খাত উন্নয়নের পদক্ষেপও শুরু হয়েছিলো তাঁর শাসনামলে। শিশু একাডেমী প্রতিষ্ঠা, ঢাকার শিশু পার্কসহ প্রেস কাউন্সিল ও বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো তাঁর শাসনামলে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্যে একুশে পদক ও স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রবর্তন করা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনা প্রকল্প শুরু করা হয়, রেডিও এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক প্রচার করা এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করা ইত্যাদি শহীদ জিয়ার আমলেই শুরু হয়।
এছাড়াও পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে গনমানুষের রাজনৈতিক মূল্যবোধের মৌল দর্শনের সংযোজন, বাক-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা, বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারনার প্রবর্তন ইত্যাদি নানা মৌলিক অবদানের জন্যে শহীদ জিয়া এক বিরল ব্যক্তিত্ব।
স্বাধীনতার ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, হৃত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাকারী, নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি ও সরকারপ্রধান, সংস্কারক, উন্নয়নকর্মী ও কূটনীতিবিদ বিভিন্ন ডাইমেশনে শহীদ জিয়ার অবদান অনস্বীকার্য। আর তাই বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নতুন আংগিকে মূল্যায়নের দিন এসেছে, নতুন প্রজন্মকে বিভিন্ন অপপ্রচার থেকে দূরে রেখে সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবচ শহীদ জিয়ার ১৯ দফার অন্তর্নিহিত তাতপর্যগুলোকে তুলে ধরার দিন এসেছে।
কাওসার মাহমুদ
কোপেনহাগেন, ডেনমার্ক
৪ই জুন ২০১১
কাওসার মাহমুদ
কোপেনহাগেন, ডেনমার্ক
৪ই জুন ২০১১